৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল: আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকের আর্টিকেলে ৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৮ম অধ্যায় সৃজনশীল
প্রশ্ন ১। রত্নার গত তিনদিন থেকে ডায়রিয়া হয়েছে। অবশেষে তার মা-বাবা তাকে মহাখালি আইসিডিডিআর’বিতে নিয়ে গেল। ডাক্তার তাকে দেখে জানালেন যে রত্নার মারাত্মক ডিহাইড্রেশন হয়েছে। ডাক্তার অতি দ্রুত তাকে স্যালাইন দেবার ব্যবস্থা করলেন এবং উপযুক্ত অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন।
ক. মানুষের দেহের কত শতাংশ পানি দ্বারা গঠিত?
খ. মানুষের প্রতিদিন পানি পান করা প্রয়োজন কেন?
গ. রত্নার ডিহাইড্রেশনের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. পাঠ্যবইয়ের আলোকে রত্নার শরীরে পানির গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক। মানুষের দেহের ৫৫-৭৫% পানি দ্বারা গঠিত।
খ। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পানি অত্যাবশ্যকীয়। মানুষ পানি না খেয়ে একদিনের বেশি থাকতে পারে না। প্রতিদিন মলমূত্র, ফুসফুস ও চামড়ার মাধ্যমে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায় এবং মানুষের দেহ পানি সঞ্চয় করে রাখতে পারে না। তাই মানুষের প্রতিদিনই বিশুদ্ধ পানি পান করা প্রয়োজন।
গ। রত্নার ডিহাইড্রেশনের কারণ হলো ডায়রিয়ার মাধ্যমে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যাওয়া। রত্নার ৩ দিন ধরে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
গত তিন দিনে ডায়রিয়ায় তার শরীরের অধিকাংশ পানি বের হয়ে গেছে। আর এ কারণে তার ডিহাইড্রেশন অর্থাৎ পানি শুষ্কতা হয়েছে। আমরা জানি, শরীরে পানির পরিমাণ, খুব কমে গেলে সেই অবস্থাকে ডিহাইড্রেশন বলে।
আর রত্নার ডিহাইড্রেশন হয়েছে মূলত ডায়রিয়া থেকে। তার শরীর থেকে ডায়রিয়ায় প্রচুর পানি বেরিয়ে গেছে, কিন্তু ঘাটতি পূরণ হয় নি, তাই সে পানি শুষ্কতায় পতিত হয়েছে।
ঘ। প্রতিটি মানুষের মতো রত্নার শরীরেও পানির গুরুত্ব অপরিসীম। পানি রত্নার বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। আমরা জানি, মানুষের দেহের ৫৫-৭৫% পানি দ্বারা গঠিত।
এজন্য রত্নার শরীরে পানি অপরিহার্য। রত্নার শরীরের প্রতিটি কোষের স্বাভাবিক কাজ বজায় রাখার জন্য পানির প্রয়োজন। তার শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করার জন্য পানি অতীব জরুরি। রত্নার শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতেও পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
পানি রত্নার খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করবে এবং কৌষ্ঠকাঠিন্য রোধ করবে। পানি তার শরীরের কোষে পুষ্টি উপাদান পরিবহনে সাহায্য করবে। তাছাড়া তার শরীর থেকে প্রতিদিন মলমূত্র, ফুসফুস ও চামড়ার মাধ্যমে পানি বেরিয়ে যায়।
আমরা জানি, মানুষের দেহ পানি সঞ্চয় করে রাখতে পারে না এবং প্রতিদিন যে পরিমাণ পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায় সে পরিমাণ পানি পান করা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন। রত্নারও বেঁচে থাকার জন্য পানি জরুরি। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, রত্নার শরীরে পানির গুরুত্ব অনেক।
প্রশ্ন ২। সামিহা মোটা হয়ে যাওয়ার ফলে তার মা তাকে ফ্যাট জাতীয় খাবার একদমই খেতে দেন না। ইদানীং প্রায়ই তার শরীরে লাল লাল গোটা ওঠে। চামড়া খসখসে হয়ে ওঠে। খাবারে স্বাদ লাগে না। সামিহার ভাই শামীম পর্যাপ্ত খেলাধুলা করে। কিছুদিন আগে জ্বর থেকে উঠেছে। প্রচণ্ড গরম পড়ায় সে বারবার পানি পান করছে।
ক. আমাদের খাদ্যের কত অংশ স্নেহজাতীয় খাদ্য থেকে নেওয়া উচিত?
খ. উৎস অনুযায়ী স্নেহপদার্থের শ্রেণিবিভাগ কর।
গ. শামীমের পানির চাহিদা বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সামিহা কোন ধরনের খাদ্য উপাদানের অভাবে ভুগছে? এর কাজ বর্ণনা কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক। আমাদের খাদ্যের দৈনিক ক্যালরির ২০% থেকে ২৫% স্নেহ জাতীয় খাদ্য থেকে নেওয়া উচিত।
খ। উৎস অনুযায়ী স্নেহ পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ১. উদ্ভিজ্জ স্নেহ : যেসব স্নেহ পদার্থ উদ্ভিদ জগৎ থেকে পাওয়া যায় তাদেরকে উদ্ভিজ্জ স্নেহ বলে। যেমন- নারিকেল তেল, সরিষার তেল ইত্যাদি। ২. প্রাণিজ স্নেহ : যেসব স্নেহপদার্থ প্রাণিজগৎ থেকে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাণিজ স্নেহ বলে। যেখানে গরুর চর্বি, ঘি, মাখন, মাছের তৈল ইত্যাদি।
গ। শামীমের পানির চাহিদা বাড়ার কারণ হলো শামীম অনেক বেশি পরিশ্রম করে অর্থাৎ খেলাধুলা করে। সম্প্রতি সে জ্বর থেকে উঠেছে এ কারণেও তার পানির চাহিদা বেড়েছে।
তাছাড়া খুব বেশি গরম আবহাওয়ার কারণে অনেক ঘাম হওয়ার ফলেও তার পানির চাহিদা বেড়েছে। আমরা জানি, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পানি অত্যাবশ্যকীয়। মানুষ পানি না খেয়ে একদিনের বেশি থাকে পারে না। প্রতিদিন মলমূত্র, ফুসফুস ও চামড়ার মাধ্যমে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায় এবং মানুষের দেহ পানি সঞ্চয় করে রাখতে পারে না। তাই মানুষের প্রতিদিনই বিশুদ্ধ পানি পান করা প্রয়োজন।
মানুষের দেহের ৫৫-৭৫% পানি দ্বারা গঠিত। এজন্য আমাদের শরীরে পানি অপরিহার্য। শরীরের প্রতিটি কোষের স্বাভাবিক কাজ বজায় রাখার জন্য পানির প্রয়োজন। তাছাড়া আমাদের শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করার জন্য পানি অতীব জরুরি। আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতেও পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পানি খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে এবং কৌষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। পানি শরীরের কোষে পুষ্টি উপাদান পরিবহনে সাহায্য করে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, শরীরে পানির গুরুত্ব অনেক।
ঘ. সামিহা স্নেহপদার্থ বা ফ্যাটজাতীয় খাদ্য উপাদানের অভাবে ভুগছে। নিচে স্নেহপদার্থ বা ফ্যাটের কাজ হলো-
১. স্নেহপদার্থের প্রধান কাজ হলো তাপ ও শক্তি সরবরাহ করা। ১ গ্রাম স্নেহপদার্থ থেকে দেহে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়।
২. দেহে শক্তির উৎস হিসেবে সঞ্চিত থাকে।
৩. কোষপ্রাচীরের সাধারণ উপাদান হিসেবে স্নেহপদার্থ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে— কে দ্রবীভূত করে দেহে গ্রহণ উপযোগী করে তোলে।
৫. দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোকে সংরক্ষণের জন্য স্নেহপদার্থের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
৬. দেহ হতে তাপের অপচয় রোধ করে শরীর গরম রাখে।
৭. স্নেহপদার্থ চর্মরোগের হাত থেকে রক্ষা রাখে।
৮. খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধি করে। সুতরাং বলা যায়, আমাদের দেহকে সুস্থ-সবল রাখতে স্নেহপদার্থ বা ফ্যাটজাতীয় খাদ্যের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা বিষয়ক সকল ধরণের আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।