Breaking News

৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল

৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল: আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকের আর্টিকেলে ৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।

৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল

প্রশ্ন ১। জিয়াদের মা খেলাধুলাকে সময়ের অপচয় মনে করেন। তিনি জিয়াদকে খেলতে দেখলেই চেঁচামেচি করেন। জিয়াদ ক্রিকেট খেলা খুব পছন্দ করলেও মায়ের জন্য সে বাইরে যায় না। কিন্তু ঘরে সে তার খেলনাগুলো নিয়ে ভেঙে গঠন রহস্য আবিষ্কার করার চেষ্টা করে। কিন্তু এতেও তার মার আপত্তি। কারণ সে খেলনাগুলো ভাঙছে। তার বাবা বিষয়টি দেখে তার মাকে বললেন তুমি কি জানো, খেলা ওর সার্বিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ? ওকে পড়াশুনার পাশাপাশি খেলতে দাও।

ক. অঙ্গ সঞ্চালনমূলক খেলা কী?
খ. খেলা দেখে কীভাবে উপকৃত হওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. জিয়াদের ক্রিকেট খেলা ও আবিষ্কারমূলক খেলা তাকে কোন ধরনের বিকাশে সহায়তা করবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জিয়াদের বাবার মন্তব্যের যথার্থতা বিচার কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক। অঙ্গ সঞ্চালনমূলক খেলা বলতে সেসকল খেলাকে বোঝায় যে খেলাগুলো শিশুরা শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে খেলে থাকে।

খ। অনেক সময় শিশুরা নিজে অংশগ্রহণ না করে অন্যের খেলা দেখেও আনন্দ পায় । টিভি দেখা, গল্প শোনা ইত্যাদিও এক ধরনের খেলা, যা থেকে শিশুরা আনন্দ লাভ করে। এতে করে ভাষা, চিন্তা ও কল্পনাশক্তির বিকাশ ঘটে এবং সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং খেলা দেখেও উপকৃত হওয়া যায় ।

গ। জিয়াদের ক্রিকেট খেলা ও আবিষ্কারমূলক খেলা তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে। উদ্দীপকের জিয়াদ ক্রিকেট খেলা খুব পছন্দ করে। কিন্তু তার মা খেলাকে সময়ের অপচয় মনে করেন। তাই জিয়াদ ঘরে তার খেলনাগুলো নিয়ে ভেঙেচুড়ে খেলনার গঠন রহস্য আবিষ্কারের চেষ্টা করে। এ দুটো খেলাই জিয়াদের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

আরও দেখুন  ৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১১ অধ্যায় সৃজনশীল

ক্রিকেট হল অঙ্গ সঞ্চালনমূলক খেলা। এ খেলায় জিয়াদের শরীর সঠিকভাবে বিকশিত হবে। এ দলগত খেলায় সে সামাজিকতা শিখবে, নেতৃত্ব দিতে শিখবে। তাছাড়া তার আবিষ্কারমূলক মনোভাব তাকে ভবিষ্যৎ জীবন গঠনে সহায়তা করবে। এ খেলা থেকে বস্তুর আকার, আকৃতি, কীভাবে এগুলো তৈরি হয়েছে, কীভাবেই বা কাজ করে ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে তার ধারণা হবে। আর এভাবে খেলার মাধ্যমে জিয়াদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ত্বরান্বিত হবে।

ঘ। জিয়াদের বাবার মন্তব্যটি পুরোপুরি সঠিক। জিয়াদের বাবার মতে, খেলা জিয়াদের সার্বিক বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই তিনি জিয়াদের মাকে বলেছেন যে, তিনি যেন জিয়াদকে খেলতে দেন। কেননা খেলাধুলা শরীরকে সুগঠিত করে, মনে আনন্দ দেয়, সামাজিকতার বিকাশ এবং বুদ্ধিমত্তা ও সৃজনশীলতা প্রকাশে সহায়তা করে। খেলাধুলা সহনশীলতা ও সহমর্মিতা শেখায় এবং ভাগাভাগি করে নেওয়ার মনোভাব তৈরিতে সহায়তা করে।

খেলাধুলার মধ্য দিয়েই শিশু সঙ্গ-সাথীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। শিশুরা এর মাধ্যমে নিজেকে অন্যের কাছে প্রকাশ করতে পারে, অন্যকে বুঝতে শেখে, অন্যের অনুভূতিকে মূল্য দিতে শেখে। খেলাধুলা তাদের মধ্যে ন্যায়-অন্যায়বোধ জাগ্রত করে। এমনকি খেলাধুলা শিশুকে অপরাধ প্রবণতা থেকে রক্ষা করে।

গার্হস্থ্য বিজ্ঞান পাঠে আমরা জানতে পেরেছি যে, আধুনিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, খেলা শিশুর সার্বিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলা শিশুর শারীরিক ও সামাজিক দক্ষতা অর্জনের সহজ মাধ্যম যা তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করে। খেলা শিশুর অভিজ্ঞতা বাড়ায়, আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে এবং ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য প্রস্তুত করে তোলে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, জিয়াদের বাবার মন্তব্যটি যথার্থ।

প্রশ্ন ২। রাফিদ, সুমন, অনিম, হিমু চার জন খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু । তারা সমবয়সী এবং একই ক্লাসে পড়াশুনা করে। তারা চার জন প্রায়ই খেলার আয়োজন করে বিভিন্ন মহল্লায় প্রতিযোগিতামূলক খেলায় অংশগ্রহণ করে। তারা মনে করে নিয়মিত খেলাধুলার মাধ্যমে একে অপরকে চেনা-জানার সুযোগ হয় এবং শরীর ও মন প্রফুল্ল থাকে।

আরও দেখুন  ৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৯ম অধ্যায় সৃজনশীল

ক. খেলা কী?
খ. অভ্যন্তরীণ খেলা প্রত্যয়টি ব্যাখ্যা কর।
গ. রাফিদ, সুমন, অনিম ও হিমুর ব্যক্তিগত জীবনে খেলার নৈতিক মূল্য কতটুকু প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. অনুচ্ছেদের আলোকে শিশুর জীবনে খেলার প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক। যার মাধ্যমে মানুষের বিনোদনসহ দৈহিক, মানসিক ও সামাজিক দক্ষতার বিকাশ ঘটে তাকে খেলা বলে।

খ। ঘরে বসে একাকী বা দু-চার জন বন্ধুবান্ধব অথবা ভাইবোন মিলে যে খেলা হয় তা অভ্যন্তরীণ খেলা। এ ধরনের খেলাগুলো হচ্ছে পুতুল খেলা, দাবা খেলা, লুডু, কেরামবোর্ড, যদু-মধু, ষোলগুটি, কম্পিউটার গেম, ভিডিও গেম ইত্যাদি।

গ। উন্নত চরিত্র মানবজীবনের পরম সম্পদ। খেলার মাধ্যমে শিশুর নৈতিকতার প্রশিক্ষণ হয়। উপযুক্ত পরিচালনায় খেলাধুলা করলে শৈশবেই শিশু সৎ সত্যবাদী, ‘শক্তিমনা, সহনশীলতা, সহানুভূতি ইত্যাদি নৈতিক গুণাবলি অর্জন করে। দলবদ্ধভাবে খেলাধুলা করলে হারজিত নিয়ে দুঃখ-বিবাদ করা চলে না, হেরে গিয়ে ঝগড়া করা, ভেঙে পড়া ভালো খেলোয়াড়ের মনোভাব নয়।

খেলার মাধ্যমে শিক্ষালাভ করে যে, খেলার রীতিনীতি পালন না করলে বা খেলায় হেরে গেলে উপযুক্ত ফলাফল ভোগ করতে হয়। খেলাধুলার মধ্যদিয়ে শিশুরা জয়-পরাজয়ের শিক্ষা লাভ করে বাস্তব জীবনকে সোদ্রতে শেখে। এভাবেই খেলাধুলা হতে রাফিদ, সুমন, অনিম ও হিমুর ব্যক্তিগত জীবনে নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত হবে।

ঘ। শিশুর জীবনে খেলার বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এগুলোকে খেলার মূল্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নিচে খেলার প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে বিশ্লেষণ করা হলো—

১. শারীরিক ও মানসিক বিকাশ : খেলাধুলা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে যথেষ্ট সহায়ক। শিশু খেলাধুলার সময় ছুটাছুটির ফলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঞ্চালন হয়। এতে রক্ত সঞ্চালন, খাদ্য পরিপাক খাবারের প্রতি রুচি ও ঘুম ভালো হয়।

২. চিকিৎসা মূল্য : শিশু খেলার মধ্যে ডুবে থেকে মনের দুঃখ, বেদনা, উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ, হিংসা, ক্ষোভ ভুলে যায়। এতে তাদের মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে। দৌড়ঝাঁপ করে খেলাধুলার ফলে শরীর থেকে ঘাম বের হয়। ঘামের সাথে দেহের দূষিত পদার্থ বের হয়ে শরীরকে রোগমুক্ত রাখে।

আরও দেখুন  ৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১২ অধ্যায় সৃজনশীল

৩. সামাজিক মূল্য : দলগত খেলার মাধ্যমে অন্যের সাথে মেলামেশা, পারস্পরিক সহযোগিতা, সামাজিক রীতিনীতি, খেলার সামগ্রী ভাগাভাগি করা, দুঃখ-আনন্দ পারস্পরিকভাবে অনুভব করা ইত্যাদি সামাজিক গুণাবলি শেখে।

৪. শিক্ষালাভের মূল্য : শিশুর জীবনে খেলা শিক্ষালাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। খেলার মধ্য দিয়ে শিশু দক্ষতা ও কলাকৌশল অর্জন করে। খেলার সামগ্রী, চার্ট, ছবির মাধ্যমে শিশুর সংখ্যা জ্ঞান এবং অক্ষরজ্ঞান হয়।

৫. নৈতিক মূল্য : খেলার মাধ্যমে শিশুর নৈতিকতার প্রশিক্ষণ হয়। উপযুক্ত পরিচালনায় খেলাধুলা করলে শৈশবেই শিশু সৎ, সত্যবাদী, শক্তিমনা, সহনশীলতা, সহানুভূতি ইত্যাদি নৈতিক গুণাবলি অর্জন করে।

পরিশেষে বলা যায়, শিশুর সার্বিক বিকাশে খেলার মূল্য অপরিসীম। শারীরিক ও মানসিক বিকাশে শিশু যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে পারে, সেদিকে সকলের দৃষ্টি রাখা উচিত।

আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা বিষয়ক সকল ধরণের আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।

About মেরাজুল ইসলাম

শিক্ষা মেলা একটি শিক্ষা মূলক ওয়েবসাইট। এখানে নিন্ম মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক সহ সকল শ্রেণির সাজেশন, প্রশ্নোত্তর ও আর্টিকেল শেয়ার করা হয়।

Check Also

৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১০ম অধ্যায়

৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১০ম অধ্যায় সৃজনশীল

৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১০ম অধ্যায় সৃজনশীল: আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *