৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল: আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকের আর্টিকেলে ৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল
প্রশ্ন ১| মাহির ও সাবা দুই ভাইবোন। তারা একত্রে খেলাধুলা করে। মা-বাবা তাদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করে। অনেক সময় তারা তাদের মা বাবাকেও তাদের খেলার সাথী হিসেবে বেছে নেয়। খেলার ছলে বাবা-মা তাদের বিভিন্ন জ্ঞানমূলক শিক্ষা দিয়ে থাকেন। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
ক. শিশুর সাথে বন্ধন গড়ে তুলতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কে?
খ. শিশুর মানসিক বিকাশ বলতে কী বোঝায়?
গ. শিশুর বিকাশে মায়ের পাশাপাশি বাবার ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. পরিবার হতে পারে শিশুর প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক। শিশুর সাথে বন্ধন গড়ে তুলতে মা হচ্ছেন প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
খ। শিশু খুব অসহায় পরনির্ভরশীল অবস্থার জন্মগ্রহণ করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন আচরণের মাধ্যমে প্রত্যেক শিশু একেক ধরনের বিকাশ লাভ করে। বিকাশ অর্থ গুণগত পরিবর্তন, যা শিশু ধীরে ধীরে অর্জন করে। শিশুর মানসিক বা বুদ্ধিবৃত্তীয় বিকাশ হলো শিশুর বুদ্ধিগত দক্ষতার পরিবর্তন। এর মধ্যে পড়ে মনোযোগ, স্মরণশক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রাত্যহিক জীবনের জ্ঞান, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা, কল্পনাশক্তি, সৃজনশীলতা, ভাষার দক্ষতা, যুক্তি দিয়ে বোঝার ক্ষমতা ইত্যাদি।
গ। শিশুর বিকাশে, লালন-পালনে ও যত্নে মায়ের পাশাপাশি বাবার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেসব পরিবারে বাবা শিশুকে সঙ্গ দেন, ভাব বিনিময় করেন, সেখানে শিশুরা নিজেদেরকে বেশি নিরাপদ মনে করে। এতে করে তাদের মধ্যে সামাজিক ও আচরণগত সমস্যা কম হয়।
বাবা-মায়ের পর্যাপ্ত স্নেহের অভাবে শিশুদের শারীরিক-মানসিক উভয় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এ কারণে তারা বয়সানুযায়ী ওজনে বাড়ে না। কাজে আগ্রহ হারায়, তাদের চেহারা মলিন ও বিমর্ষ থাকে। সুতরাং শিশুর বিকাশে মায়ের পাশাপাশি বাবার ভূমিকাও অতি গুরুত্বপূর্ণ। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
ঘ। আমরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো পরিবারে বাস করি। একটি পরিবারে সাধারণত মা-বাবা, ভাই-বোন আরও অন্যান্য সদস্য একসাথে বসবাস করে। একটি শিশুর জন্মের পর থেকে পরিবার তার খাদ্য, বস্ত্র, চাহিদা মেটায়, নিরাপদ পরিবেশ দেয়, নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
মা-বাবা এবং পরিবারের সদস্যরা শিশুর প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষক। কারণ তারা শিশুর সবরকম ভালো অভ্যাস তৈরিতে সহায়তা করেন। পারিবারিক পরিবেশ থেকে যদি শিশু ভালো কাজের জন্য উৎসাহ পায় তাহলে তারা সেটা তাড়াতাড়ি শেখে। যে কাজ করলে সকলে অপছন্দ করে সেটা খারাপ কাজ বলে ধারণা লাভ করে। এভাবে পরিবার থেকে শিশুর ভালো এবং মন্দ কাজের অভ্যাস তৈরি হয়। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
পরিবারের সঠিক চালনায় একটি শিশু পরিবার এবং সমাজের একজন গুরুত্বপূর্ণ এবং উপযুক্ত সদস্য হিসেবে পড়ে উঠতে পারে। পরিবারে সকল সদস্যের সাথে ঘনিষ্ঠতা ও স্নেহের সম্পর্ক থাকে বলে পারিবারিক পরিবেশ থেকে শিশু বিভিন্ন আচরণের কৌশল শেখে। সুতরাং বলা যায়, শিশুর প্রাথমিক ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র হচ্ছে পরিবার। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
প্রশ্ন ২| দীপা ও ফারজানা দুজন ক্লাসমেট। দীপা খুব ভালো ছাত্র, সে সবার সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করে। তার মা-বাবা ও পরিবারের সাথে সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ। অপরদিকে ফারজানা প্রায়ই পরীক্ষায় খারাপ করে। তার বাবা-মা তাকে এজন্য সবসময় বকাঝকা করে এবং দীপার মতো হতে বলে। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
ক. শিশুর সাথে বন্ধন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি?
খ. “মা-বাবা এবং পরিবারের সদস্যরা শিশুর প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষক”– বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের দীপার পারিবারিক পরিবেশের ভূমিকা বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের ফারজানার মা-বাবার আচরণের মূল্যায়ন কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক। শিশুর সাথে বন্ধন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মা হচ্ছেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
খ। “মা-বাবা এবং পরিবারের সদস্যরা শিশুর প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষক”— কথাটি সঠিক। তারা শিশুর সবরকম ভালো অভ্যাস তৈরিতে সহায়তা করেন। পরিবার থেকেই তাদের ভালো এবং মন্দ কাজের অভ্যাস তৈরি হয়। জীবনের প্রথম বছরগুলোতে পরিবার থেকে শিশু যে রকম শিক্ষা, যত্ন পেয়ে থাকে তার মধ্যে সে রকম আচরণের ভিত্তি তৈরি হয়। সুতরাং একটি শিশুর জন্য তার মা-বাবা এবং পরিবারের সদস্যরা অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছেন। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
গ। উদ্দীপকের দীপার পারিবারিক পরিবেশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার সাথে মা-বাবা ও পরিবারের সকলের সাথে সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ। দীপা সকলের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করে। আর এটা সে অবশ্যই পারিবারিক পরিবেশ থেকেই রপ্ত করেছে।
কারণ আমরা আমাদের পাঠ্যপুস্তক পাঠে জেনেছি, জীবনের প্রথম বছরগুলোতে পরিবার থেকে শিশু যে রকম শিক্ষা, যত্ন পেয়ে থাকে তার মধ্যে সে রকম আচরণের ভিত্তি তৈরি হয়। পরিবারের সদস্যরা শিশুর সবরকম ভালো অভ্যাস তৈরিতে সহায়তা করেন। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
পারিবারিক পরিবেশ থেকেই দীপা সকলের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে শিখেছে। তাছাড়া সে ভালো ছাত্র। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা, ভালো ছাত্র হওয়ার পিছনেও পরিবারের অবদান অনেক। মোটকথা পরিবারের সঠিক পরিচালনায় শিশুর সঠিক বিকাশ হয়। আর উদ্দীপকের দীপা সঠিক বিকাশের পিছনে তার পারিবারিক পরিবেশের ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ।
ঘ। উদ্দীপকের ফারজানার মা-বাবার আচরণ আমার মতে অগ্রহণযোগ্য। ফারজানা প্রায়ই পরীক্ষায় খারাপ করে এবং এজন্য, তার মা-বাবা তাকে সবসময় বকাঝকা করেন আর তাকে দীপার মতো হতে বলেন। এটা সম্পূর্ণ ভুল একটি পদ্ধতি। আমরা ফারজানার বন্ধু দীপাকে দেখি তার মা-বাবা ও পরিবারের সাথে সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
আর দীপার সফলতার জন্যও তার মা-বাবা ও পরিবারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি, যে পরিবারের শিশুকে প্রশংসা করা হয়, শিশুর বিভিন্ন দক্ষতা বিকাশের জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয় সে পরিবারের শিশুর বিকাশ হয় সঠিক। অথচ ফারজানার মা-বাবা উল্টো আচরণ করেন। ফারজানাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে তার মা-বাবাকে ফারজানার সাথে ইতিবাচক আচরণ করতে হবে। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
ফারজানাকে বকাঝকা না করে, ‘নেতিবাচক কথা না বলে ইতিবাচকভাবে বোঝাতে হবে। শিশু-কিশোরদের রাগ, ভয়, কষ্টে অবহেলা না করে সহানুভূতির সাথে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ফারজানার মা-বাবার সঠিক পরিচালনায় সে পরিবার ও সমাজের একজন গুরুত্বপূর্ণ ও উপযুক্ত সদস্য হিসেবে গড়ে ওঠতে পারবে।
মা-বাবার সাথে শিশুর ঘনিষ্ঠতা ও স্নেহের সম্পর্ক থাকলে পারিবারিক পরিবেশ থেকে সে বিভিন্ন আচরণের কৌশল শেখে। আর এজন্য ফারজানার মা-বাবার আচরণ পরিবর্তন করে ফারজানাকে দক্ষতা বিকাশে উদ্বুদ্ধ করা উচিত। তার সাথে ইতিবাচক আচরণের মাধ্যমে তাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা উচিত। (৭ম শ্রেণির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল)
আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা বিষয়ক সকল ধরণের আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।