টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের খেলার ঘরানা বদলের পথে বড় একটি পদক্ষেপ তো নেওয়া হয়েই গেল। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ কিন্তু ছন্দহীন ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ হারালেন জায়গা। পরের কৌতূহল তার সম্ভাব্য বিকল্প নিয়ে। টি-টোয়েন্টি দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম আপাতত রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষায় নুরুল হাসান সোহান ও ইয়াসির আলি চৌধুরির পারফরম্যান্স দেখতে।
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে গত এক বছরে মূলত ৫ ও ৬ নম্বরে ব্যাটিং করে আসছিলেন মাহমুদউল্লাহ। দল বিপর্যয়ে পড়লে এই পজিশনে থাকা ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব থাকে ইনিংস গড়ে তোলার। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এখন যেভাবে বদলে গেছে, তাতে বিপর্যয় সামলানোর পথেও পাল্টা আক্রমণকে মনে করা হচ্ছে সেরা অস্ত্র। আর যদি ভালো অবস্থায় থাকে, তখন এই পজিশনের ব্যাটসম্যানের কাজটা হয়ে যায় ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ইনিংস শেষ করা।
দুটির কোনোটিই প্রত্যাশা অনুযায়ী করতে পারছিলেন না মাহমুদউল্লাহ। তার ওপর থেকে আস্থার হাত সরিয়ে তাই তাকাতে হয়েছে সামনে। সেখানে আপাতত শ্রীরাম অপেক্ষায় সোহান ও ইয়াসিরের।
ইয়াসির বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেছেন স্রেফ ১টি। গত মার্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই ম্যাচে তিনি আউট হন ৮ রান করে। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে তার রেকর্ড অবশ্য বাংলাদেশের বাস্তবতায় বলতে হবে বেশ ভালো। ১ হাজার ৩৮৫ রান করেছেন তিনি ২৭.১৫ গড় ও ১২৫.৭৯ স্ট্রাইক রেটে।
সোহান এর মধ্যে ৩৫টি টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন দেশের জার্সিতে। কিপিংয়ে তাকে দেশের সেরা বলে মনে করা হয়। কিন্তু ব্যাটিংয়ে সার্বিক পরিসংখ্যান আপাতত খুবই মলিন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার ব্যাটিংয়ে উন্নতির ছাপ ফুটে উঠেছে স্পষ্ট।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে এক ম্যাচে ছয়ে নেমে করেন ২২ বলে ২৮। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে এক ম্যাচে সাতে নেমে করেন ১৬ বলে ২৫। সবশেষ গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে তাকে অধিনায়ক করে পাঠানো হয়। প্রথম ম্যাচে তিনি ছয়ে নেমে খেলেন ২৪ বলে ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংস। পরে চোটের কারণে সিরিজ থেক ছিটকে যায়।
দুজনের কেউই এশিয়া কাপের দলে ছিলেন না চোটের কারণে। শ্রীরাম তাই তাদেরকে কাছ থেকে দেখতে পারেননি একটুও। তার দেখা বলতে, মিরপুরে বুধবার শেষ হওয়া তিন দিনের অনুশীলন ক্যাম্পে। এই ক্যাম্পেও শেষ দুই দিন বৃষ্টির কারণে অনুশীলন ছিল ইনডোরে বন্দি। বৃষ্টির ফাঁকে যা একটু কসরত করা গেছে কেবল প্রথম দিনে।
এই দেখা থেকেই যা ধারণা নেওয়ার, নিয়ে ফেলেছেন শ্রীরাম। মাহমুদউল্লাহর বিকল্প নিয়ে আলোচনায় ওপেনার লিটন দাসের কথাও একটু করে উঁকি দিল তার কণ্ঠে। তবে বুধবার বাংলাদেশের দল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে টেকনিক্যাল কনসালটেন্টের কথায় বাড়তি উচ্ছ্বাস প্রকাশ পেল ইয়াসিরকে নিয়ে।
আবহাওয়া আমাদের প্রতি খুব সদয় হয়নি। খুব একটা দেখতে পারিনি। তবে প্রথম দিনে কিছুটা দেখেছি। লিটনকে খুব বেশি দেখিনি, তবে সে তো প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার। নুরুল সোহান খুব ভালো, খুবই তৎপর ও নিজের খেলা সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা ওর।”
“ইয়াসির রাব্বিকে আরও বেশি দেখতে মুখিয়ে আছি আমি। তার হাতে জোর আছে, বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের যেখানে ঘাটতি। মাঝের সময়টায় আমাদের ‘ফায়ার পাওয়ার’ প্রয়োজন, এমন একজন যে বলকে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করতে পারে, বাউন্ডারি আদায় করতে পারে। সত্যি বলতে, তাকে অনেক বেশি দেখিনি আমি। তবে অল্প যা একটু দেখেছি, দারুণ সম্ভাবনাময় মনে হয়েছে তাকে।”