নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল: আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকের আর্টিকেলে নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল
প্রশ্ন ১। নতুন বাসার জন্য রাজিব কিছু আসবাব কিনবে। তার মা তাকে আসবাব কেনার আগে কতগুলো বিষয় বিবেচনা করতে বললেন। এগুলো হলো- প্রয়োজনীয়তা, পরিবারের আয়, আসবাবের মূল্য, আরাম, উপযোগিতা, রুচি ইত্যাদি। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
ক. আসবাব বিন্যাসে ছন্দ প্রয়োগ করা হলে গৃহসজ্জায় কী সৃষ্টি হয়?
খ. প্রয়োজনীয় আসবাব বিন্যাস বলতে কী বোঝ?
গ. রাজিব আসবাব কেনার ক্ষেত্রে প্রথমেই কোন বিষয়টি বিবেচনা করবে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের বিবেচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে কোন বিষয়টিকে চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা বলা যায়? তোমার মতামতের সপক্ষে যুক্তি দাও।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক। আসবাব বিন্যাসে ছন্দ প্রয়োগ করা হলে গৃহসজ্জায় নান্দনিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
খ। প্রয়োজনীয় আসবাব বিন্যাস বলতে কক্ষের ব্যবহার অনুযায়ী আসবাব বিন্যাস করাকে বোঝায়। সব সময় কক্ষটি কী কাজে ব্যবহার করা হবে তার ওপর বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় আসবাবগুলো রাখতে হবে। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
গ। রাজিব আসবাব কেনার ক্ষেত্রে প্রথমেই বিবেচনা করবে আসবাবটির প্রয়োজন আছে কিনা। রাজিবের নতুন বাসার জন্য কিছু আসবাব কেনা প্রয়োজন। গৃহকে বাসোপযোগী করার জন্য প্রয়োজন হয় আসবাবপত্র। এক্ষেত্রে দামি আসবাবের প্রয়োজন নেই। সামর্থ্য অনুযায়ী কম দামি জিনিস দিয়েও গৃহসজ্জা করা যায়।
তবে এতে সৃজনীশক্তির প্রয়োজন। হুজুগের বসে অপ্রয়োজনীয় আসবাব ক্রয় করলে পরে তা বেমানান মনে হয়। এছাড়া এতে অর্থেরও অপচয় হয়। অনেক সময় পুরাতন আসবাব রং করে বা বার্নিশ করে নতুনের মতো করে নেওয়া যায়। এতে অর্থের অপচয় হয় না। রাজিব প্রথমে তার আসবাবের প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করেই আসবাব ক্রয় করবে। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
ঘ। রাজিবের মায়ের বলা বিবেচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে উপযোগিতাকে চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা বলা হয়। রাজিব তার নতুন সংসারের জন্য আসবাব কেনার পূর্বে কতগুলো বিষয় বিবেচনা করবে। যে আসবাবটি কেনা হবে সেটি চাহিদা মেটাতে পারবে কি না তা বিবেচনা করতে হবে। যেমন- ছোট শিশুর ব্যবহারের আসবাব তার বয়স উপযোগী হবে।
খাট, চৌকি এগুলো আমাদের শয়ন কাজের চাহিদা মেটায়। আবার টুল, মোড়া, সোফা, চেয়ার এগুলো আমাদের বসার কাজের চাহিদা মেটায়। আসবাব কী উপাদানের তৈরি তার ওপরও উপযোগিতা নির্ভর করে। যেমন- কাঠের আসবাবের চেয়ে গদিওয়ালা আসবাবের আরাম বেশি। ফলে এর উপযোগিতা বেশি। রাজিব আসবাব ক্রয়ের পূর্বে আসবাবের উপযোগিতা অর্থাৎ চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা বিষয়টি বিবেচনা করবে। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
প্রশ্ন ২। রুকাইয়া একজন গৃহিণী। তিনি বিভিন্ন কক্ষে খাট, আলনা, আলমারি, ডাইনিং টেবিল, সোফাসেট, ফ্রিজ, ফুলদানিতে ফুল ইত্যাদি সাজিয়ে রাখেন কিন্তু তার কোন বিন্যাসই আকর্ষণীয় লাগে না। বুকাইয়ার প্রতিবেশি নাজমা বেগম বেড়াতে এসে তাকে আসবাব বিন্যাসের নিয়ম সম্পর্কে পরামর্শ দেন। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
ক. আসবাবপত্রের উপযোগীতা বলতে কী বোঝ?
খ. শিল্পসৃষ্টিতে দামি জিনিসের প্রয়োজন হয় না কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. বুকাইয়া কীভাবে তার বসার কক্ষকে আকর্ষণীয় করতে পারেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. বুকাইয়ার প্রতিবেশি নাজমা বেগম এর পরামর্শটি মূল্যায়ন করো।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক। আসবাবের উপযোগিতা হলো তার চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা।
খ। শিল্প সৃষ্টি মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। হাতের কাছে যা পাওয়া যায় বা ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে শিল্প সৃষ্টি করা যায়। যেমন- কুমার মাটি দিয়ে নকশাদার জিনিস তৈরি করে। তাই শিল্প সৃষ্টিতে দামি জিনিসের প্রয়োজন হয় না।
গ। সঠিকভাবে আসবাব বিন্যাসের মাধ্যমে রুকাইয়া তার বসার ঘরকে আকর্ষণীয় করতে পারেন। বসার ঘরে পরিচিত লোকজন বা আত্মীয়-স্বজন এসে বসে। সামাজিকতা রক্ষার কেন্দ্রস্থল হলো বসার ঘর। এই কক্ষের বিন্যাস বাড়ির লোকদের রুচি বোধ বাইরের লোকের কাছে প্রকাশ করে। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
রুকাইয়া বিভিন্ন কক্ষে খাট, আলনা, আলমারি, ডাইনিং টেবিল, সোফাসেট, ফ্রিজ, শোকেস, ফুলদানিতে ফুল ইত্যাদি এমনভাবে রেখেছেন যে কোনো বিন্যাসই আকর্ষণীয় লাগে না। তিনি বসার ঘরে সোফাসেট, ডিভান, মোড়া, বুক সেলফ, শোকেস রাখতে পারেন। বসার কক্ষকে আকর্ষণীয় করার জন্য বড় ফুলদানিতে ফুল, একুরিয়াম, চিত্রকর্ম, খ্যাতিমান ব্যক্তির ছবি, কার্পেট ইত্যাদি রাখতে পারেন।
এছাড়া তিনি আলো বাতাসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, চলাচলের সুবিধা, শিল্পনীতি অনুসরণ করে বসার কক্ষে আসবাব বিন্যাস করতে পারেন। এভাবেই আসবাব বিন্যাস করে তিনি তার বসার ঘরকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
ঘ। আসবাব নির্বাচনের পরবর্তী কাজ হলো সঠিকভাবে তা বিন্যাস করা। আসবাবপত্র বিন্যাস যে শুধু ঘর সাজানোর জন্য তা নয়। সঠিকভাবে আসবাব বিন্যাসের মাধ্যমে গৃহের অভ্যন্তরীণ সজ্জাকে আকর্ষণীয়, আরামদায়ক ও সুবিধাজনক করে রাখা হয়। উদ্দীপকে বুকাইয়া একজন গৃহিণী। তিনি তার আসবাবপত্র এমনভাবে বিন্যাস করেছেন যে দেখতে আকর্ষণীয় লাগে না। রুকাইয়ার প্রতিবেশি তাকে আসবাব বিন্যাসের নিয়ম সম্পর্কে পরামর্শ দেন।
সঠিক আসবাব বিন্যাসের ফলে আরাম ও মানসিক তৃপ্তি বাড়ে। আসবাব বিন্যাসের ক্ষেত্রে প্রথমেই এর ব্যবহারিক দিক বিবেচনা করতে হয়। অর্থাৎ প্রতিটি কক্ষের কাজ অনুযায়ী আসবাব সাজাতে হয়। যে কক্ষে যে যে কাজ সম্পন্ন হয় তার সাথে সম্পর্কযুক্ত আসবাব স্থাপন করতে হয়। দরজা-জানালা খুলতে ও বন্ধ করতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেদিকে লক্ষ রেখে আসবাব বিন্যাস করতে হবে। আসবাব বিন্যাস কখনোই স্থায়ীভাবে একই জায়গায় করা উচিত নয়।
মাঝে মাঝে আসবাবপত্রের বিন্যাসে রুচির রদবদল করলে গৃহ সজ্জায় নতুনত্ব আসে। এছাড়া আসবাব বিন্যাসে শিল্পনীতির প্রয়োগ করলে এর সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পায়। নাজমা বেগম উপরিউক্ত পরামর্শগুলো রুকাইয়াকে দিয়েছেন যাতে করে সুষ্ঠু আসবাব বিন্যাসে কক্ষের পরিপাট্য ফুটে উঠে। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
প্রশ্ন ৩। শৈলি খাবার ঘরের আসবাবগুলো এমনভাবে বিন্যাস করেছেন যে খাবার পরিবেশনে তার অসুবিধা হয়। তার প্রতিবেশি দিশা তাকে আসবাব বিন্যাসের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো বিশেষ করে শিল্পনীতির প্রতি লক্ষ রেখে আসবাব বিন্যাস করার পরামর্শ দিলেন। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
ক. গৃহের অবস্থান কোন মুখী হলে আলো-বাতাস পাওয়া যায়?
খ. শহরাঞ্চলের মানুষ হালকা আসবাব ব্যবহার করে কেন?
গ. শৈলি তার সমস্যা সমাধানে চলাচলের সুবিধা বিষয়টি কীভাবে লক্ষ রাখবে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. শৈলি তার প্রতিবেশির প্রদত্ত লক্ষণীয় বিষয়গুলো হতে শিল্পনীতি বিষয়টি দ্বারা কীভাবে গৃহকে আকর্ষণীয় করে তুলবে? বিশ্লেষণ করো।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক। গৃহের অবস্থান দক্ষিণ বা পূর্বমুখী হলে আলো-বাতাস পাওয়া যায়।
খ। শহরাঞ্চলে কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা বেশি হয়। অধিকাংশ লোকই ভাড়া বাড়িতে থাকে। এছাড়া অনেকেই বদলির চাকরি করে। তাই গৃহের আকার ও বদলির সময় স্থানান্তর করার সুবিধার্থে শহরাঞ্চলের মানুষ হালকা ও যুগোপযোগী আসবাব ব্যবহার করে। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
গ। আসবাব নির্বাচনের পরবর্তী কাজ হলো সঠিকভাবে তা বিন্যাস করা। সঠিকভাবে আসবাব বিন্যাসের মাধ্যমে গৃহের অভ্যন্তরীণ সজ্জাকে আকর্ষণীয়, আরামদায়ক ও সুবিধাজনক করে তোলা যায়। ২(ঘ)নং সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দ্রষ্টব্য।
ঘ। শৈলির প্রতিবেশি দিশা তাকে আসবাব বিন্যাসে কতগুলো বিষয় লক্ষ রাখতে বললেন। তিনি শিল্পনীতির প্রয়োগ সম্পর্কেও জানালেন। শিল্পনীতিগুলো হলো সমানুপাত, সামঞ্জস্য, ভারসাম্য, ছন্দ এবং প্রাধান্য। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
ঘরের আকৃতির সাথে আসবাবপত্রের আকার এবং পরস্পরের আকৃতির অনুপাত ঠিক হলে সমগ্র গৃহসজ্জার আসবাব বিন্যাসে মিল হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। কক্ষের আসবাবের বিন্যাসে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। একদিকে বেশি ও অন্যদিকে কম আসবাব রাখলে ভারসাম্য রক্ষা হবে না। ঘরের সব আসবাবের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে হবে।
এছাড়া আসবাব বিন্যাসে ছন্দ প্রয়োগ করলে কক্ষের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে দৃষ্টি ওঠানামা করে। গৃহের প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুকে প্রাধান্য বলে। বসার ঘরে সেন্টার টেবিলে তাজা ফুল, শোবার ঘরে সুদৃশ্য আসবাব বা কার্পেট ইত্যাদি দিয়ে প্রাধান্য সৃষ্টি করা যায়। উপরিউক্তভাবে আসবাব বিন্যাসে শিল্পনীতির প্রয়োগ করে শৈলি গৃহকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবে। (নবম-দশম গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ৫ম অধ্যায়)
আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা বিষয়ক সকল ধরণের আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।